
দাবি আদায়ে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের খামারবাড়িতে অবস্থান, স্থবির ডিএই
- আপলোড সময় : ২২-০৪-২০২৫ ০৩:১৩:৩৬ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২২-০৪-২০২৫ ০৩:১৩:৩৬ অপরাহ্ন


ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ প্রদান ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে গেজেট আকারে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে আন্দোলন করেছে কৃষি ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে তারা রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) মূল ফটক বন্ধ করে দেয়।
এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটিতে প্রবেশ করতে পারেননি। স্থবির হয়ে পড়ে কৃষির প্রধান এই প্রাণকেন্দ্র। পরে শেরে বাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েরর একদল শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটিতে এসে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি অবস্থান নেন। এতে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা খামারবাড়ি ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এছাড়া খামারবাড়িতে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর অবস্থান তুলে নেয় ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার রাজধানীর খামারবাড়িতে দফায় দফায় এসব ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী খামারবাড়ির প্রধান সড়কে এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবস্থান নেন।
জানা গেছে, এগ্রি ব্লকেড কর্মসূচির নামে কৃষি ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) মূল গেট বন্ধ করে দিয়েছে। সকাল ১০টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এতে ডিএই’র অনেক কর্মকর্তা অফিসে ঢুকতে পারেননি। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থার পর দুপুর দেড়টার দিকে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খামারবাড়ির সামনে জড়ো হন। এ সময় ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা খামার বাড়ির ভেতরে সেøাগান দেন আর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খামারবাড়ির গেটের বাইরে সেøাগান দেয়। পরে এক পর্যায়ে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা অবস্থান ত্যাগ করেন।
এদিকে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর এগ্রি ব্লকেড কর্মসূচির প্রত্যাহার করে কৃষি ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা। দুপুর আড়াইটার দিকে তারা খামারবাড়ি ছেড়ে চলে যান। দুপুর ১টার দিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা বৈঠক করেন। বৈঠকে শিক্ষার্থীরা তাদের আট দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের ৮ দফা দাবি নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করে ডিএই কর্তৃপক্ষ। এরপর কৃষি মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিকেলে বৈঠক করবে বলে আশ্বস্ত করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে খামারবাড়ির অবরোধ তুলে নেন।
খামারবাড়ির সামনে কথা হয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. মুরাদুল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে মেনে নেয়া হয়েছে। তারপরও কারও ইন্ধনে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আলোচনায় বসার কথা জানালেও তারা (শিক্ষার্থীরা) রাজি না। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে খামারবাড়ির সামনে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অবস্থান নেন।
কৃষিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার জন্য বাংলাদেশে সরকারি ১৮টি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসহ ২৬০টি বেসরকারি কৃষি কলেজ রয়েছে, যেখানে কৃষিতে ৪ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে অধ্যয়ন করা হয়। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী আছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে গেজেট করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে এবং প্রতিবছর নিয়োগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষক সংকট দূর করতে হবে।
বাকি দাবিগুলো হলো-কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) অধীন থেকে বের করে সম্পূর্ণভাবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আলাদা প্রতিষ্ঠান করতে হবে। সব কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদটি শুধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষিত করতে হবে। ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ন্যূনতম দশম গ্রেডের পে-স্কেলে বেতন দিতে হবে। কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মাঠ সংযুক্তি ভাতা প্রদান করতে হবে এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকরিতে প্রবেশের পর ছয় মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ